আগুন বীর্যে জীবন আমার
সু শা ন্ত হা ল দা র
ঠিক তিন শ’ বাহান্ন সেকেন্ড প’র মৃত্যু হবে আমার
এমন সংবাদে নিশ্চয়ই বিচলিত হবেন সবাই
কিন্তু আমি স্থির হলাম মৃত্যুর মুখোমুখি হবার
সব আলো নিভিয়ে শুয়ে পড়লাম বিছানায়
ফুসফুস ভরে শ্বাস নিয়ে যেই চোখ খুললাম
দেখলাম
অসংখ্য দাবানলে পুড়ে যাচ্ছে ঘর আমার
দাউদাউ আগুন থেকে উঠে আসলেন বায়ুস্থিত অশরীরী ‘ঈশ্বর’ এবার
কম্পিত বায়ু অশান্ত করে বললেন –
সর্প খচিত খোলসে তোমাকে পৃথিবীতে পাঠানো হবে আবার
এহেন কথায় আমি ভয় পেলাম,এবং
বিনয়াবনত মুখে বললাম –
‘পৃথিবী শূন্য হবে গুণগ্রাহী আপনার’
অগ্নিস্ফুলিঙ্গে শায়িত শয্যা মুহূর্তে পুড়িয়ে ফেললেন ঈশ্বর আমার
আমি উঠে বসলাম এবং বললাম –
আপনাকে কামড়িয়েই নরকে যাব এবার
ঈশ্বর থতমত খেয়ে বললেন –
বৎস্য!
আগুন অস্তিত্বে বিশ্বাস নেই তোমার
বীর্য নির্ভর জীবন নরক নামান্তর
ভেবে দেখ, পুড়বে নাকি মরবে?
আমি বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালাম এবং বললাম –
‘পুড়ে পুড়ে ছারখার পঞ্চাশ আমার
যদি জ্বলাই জীবন হয় আবার
তবে তাই হোক, আসুন
কুণ্ডলিত আগুনেই ঝাঁপ দেব এবার’
ঈশ্বর তিন পা এগিয়ে এসে বললেন –
‘মানুষকে বিশ্বাস নাই আমার
তবুও কবি বলে
আগুন কাঙ্খিত বুকে কিঞ্চিৎ দাবানল রেখে গেলাম’
সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি
অজস্র টার্বাইনে পোড়ে গেছে খুঁটিবিহীন ঘর আমার!
গন্দম প্রীতির অধিকার
বিবেক পোড়া হাটে
সবাই আত্মপ্রচার ক্যানভাসার
মিথ্যার যে ফলন বেশি
তা দেখেছি
যখন জ্ঞান বিবর্জিত দেশে পাঠক শূন্য সব গ্রন্থাগার
ঢোক গেলা বুকে জমা করেছি কত দীর্ঘশ্বাস
চেনা মানুষ অচেনা হয়েছে
দাবানলে জবা যুঁই পুড়েছে
আঁধার ঘনিয়ে এলে রাতের জৌলুসে
শরীর ধর্মে পুরুষ ঈশ্বর ভুলেছে
অথচ আমি
মৃত্যুর খোয়াব দেখে দেখে
ভুলে গেছি গন্দম প্রীতির অধিকার!
পরিতাপ
সঙ্গম দৃশ্যে যতটা না কেঁপেছিলে
তারচেয়েও অধিক কেঁপেছিলে
নির্বোধ রাবণ যখন অসুর সম্ভাষণ করে
বড় পরিতাপ
নারায়ণী যজ্ঞে মানুষের নাই অধিকার
তবুও বিলাপ কাতর কালো গোলাপ আজ
শোক সন্তপ্ত মৌন মিছিলে হো চি মিন হয়ে উঠে !
প্রহর গোনা নক্ষত্র
আমিও হয়ত থাকবো না
তখন যদি লাল পতাকায় হু হু হাওয়া বদলে যায়
ঘন কুয়াশায় রৌদ্রের ঝিলিক যদি ক্ষিপ্ত উগ্র হয়
সমতট যদি সুনামি ভ্রুক্ষেপে তেজোদ্দীপ্ত বিপ্লবী হয়
তবে বুঝে নিও সভাসদ বন্ধুগণ….
তোমাদের অনুপস্থিতিতেই হয়ত একদিন
অসামঞ্জস্যতা খুঁজে নেবে জহুরুল আর বদুরুদ্দিন,
তবুও দিন শেষে বলতেই হয়
নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড় যেন প্রহর গোনা নক্ষত্র-ই হয়!
অভিশাপ
এত সংঘাত, এত ভাঙা ভাঙি
আগে দেখিনি,
মনে করেছিলে কেটে যাবে দিন উপাস্য ভঙ্গিতে
কে জানতো
মহাভারতের কর্ণের মতো আমাকেও স্বজন সম্মুখে
লম্পট দুর্যোধনের পক্ষ নিতে হবে?
মনে করেছিলে….
কেটে যাবে দিন ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির সান্নিধ্যে,
আসলে রাজা আর রাজ্য রক্ষার্থে…
আমাকেই কেন খাণ্ডবদাহনে তক্ষক হতে হবে?